ধর্মীয় নানা আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রাঙামাটি রাজবন বিহারে পালিত হয়েছে মহাপরিনির্বাণপ্রাপ্ত বৌদ্ধ আর্য্যপুরুষ শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের ১০১তম জন্মোৎসব। বুধবার ভোর ৫টায় বনভান্তের জন্মস্মৃতি স্মরণে কেক কাটেন রাঙামাটি রাজবন বিহারের আবাসিক ভিক্ষুপ্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির।
বনভান্তেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে সকাল থেকে নামে পুণ্যার্থীর ঢল। বনভান্তের প্রতিকৃতিতে পুষ্পামাল্য অর্পণ করেন ভিক্ষু-শ্রামণসহ সমবেত পুণ্যার্থীরা। বনভান্তের ১০১তম জন্মোৎসব ঘিরে বুদ্ধপূজা, ত্রিপিটক পাঠ, বনভান্তেকে নিয়ে স্মৃতিচারণ, ১১৮ শ্রামণকে উপসম্পদা প্রদান, বাংলায় সমগ্র ত্রিপিটকের অ্যাপস উদ্বোধন, সম্মাননা প্রদান ছাড়াও বুদ্ধমূর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, পঞ্চশীল প্রার্থনা, হাজার প্রদীপ উৎসর্গ, পিন্ডদান, মঙ্গলসূত্র পাঠ ও ধর্মীয় সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যোগ দেন হাজারো ভক্ত, পুণ্যার্থীরা। সকালে ধর্মদেশনা দেন রাঙামাটি রাজবন বিহারের আবাসিক ভিক্ষুপ্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকর মহাস্থবির, শ্রীমৎ ইন্দ্রগুপ্ত মহাস্থবির, ফুরোমন আন্তর্জাতিক বন ভাবনা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ভৃগু মহাস্থবিরসহ প্রমুখ।
সমগ্র বৌদ্ধ জাতি তথা সমগ্র বিশ্ব শান্তি মঙ্গল কামনায় ধর্ম দেশনা প্রদান করেন রাঙামাটি রাজবন বিহারের অধ্যক্ষ, বনভান্তের শিষ্য সংঘের ও আবাসিক প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালঙ্কার মহাস্থবির ও ফুরমোন সাধনাতীর্থ আর্ন্তজাতিক ভাবনা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ভৃগু মহাস্থবির।
অনুষ্ঠানে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন, রাঙামাটি রাজবন বিহারের কার্যনির্বাহী পরিষদের সভাপতি গৌতম দেওয়ান। এছাড়াও সাবেক পার্বত্য উপমন্ত্রী মনিস্বপন দেওয়ান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ানসহ বিশিষ্টজন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও সন্ধ্যায় হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলন হয়।
উল্লেখ্য যে, ১৯২০ সালের ৮ জানুয়ারি শ্রাবক বুদ্ধ শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির(বনভান্তে) রাঙামাটি জেলার মগবান ইউনিয়নের মোরঘোনা নামক স্থানে পূণ্যবতী মহীয়ষী বীরপুদি চাকমার গর্ভে জন্ম লাভ করেন। ৩০ জানুয়ারি ২০১২ সালে দেহত্যাগ করেন।