চল্লিশ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য যেসব ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে, তার একটি ছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর। দীর্ঘ প্রায় দুই দশকের রক্তক্ষয়ী এক সশস্ত্র সংঘাতের অবসান ঘটে এই চুক্তির মাধ্যমে। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের তিনটি জেলায় শুরু হয় শান্তির প্রক্রিয়া। মূল স্রোতে ফিরে আসার প্রক্রিয়া শুরু করে পাহাড়ীরা। ১৯৭০ এর দশকেই পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনী হাতে অস্ত্র তুলে নেয়। আর অন্যদিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ঐ অঞ্চলে তাদের শক্তি বাড়ায়। এরই মধ্যে সমতল ভূমি থেকে বাংলাভাষী মানুষদের পাঠানো হয় পার্বত্য তিন জেলায় নতুন বসতিস্থাপনকারী হিসেবে। ফলে সমস্যা আরো জটিল আকার ধারণ করে। হাজার হাজার পাহাড়ী আশ্রয় নেয় ভারতে শরণার্থী হিসেবে।
সাবেক সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদের সময়ে সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে শুরু হওয়া আলোচনা বিএনপির নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়েও চালু থাকে। কিন্তু পাহাড়ীদের পক্ষ থেকে শান্তি আলোচনাকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হয় ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ২১ বছর বাদে ক্ষমতায় আসার পর। ঐ বছরই সরকার গঠিত জাতীয় কমিটির সঙ্গে আলোচনায় বসে জনসংহতি সমিতি। আর শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর।