রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এই তিন পার্বত্য জেলাসহ সারাদেশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব মাসব্যাপি দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব নির্বিঘ্নে করার সুবিধার্থে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত একমাস হরতাল অবরোধ না দেয়ার জন্য বিরোধী ১৮ দলীয় জোটের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা।
বৃস্পতিবার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পক্ষে দেয়া এক বিবৃতিতে দিঘীনালা বন বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি বিশ্বকল্যাণ চাকমা এবং যমচুগ বনাশ্রম ভাবনা কেন্দ্র পরিচালনা কমিটির সহসাধারন সম্পাদক বিহারী চাকমা এই দাবি জানান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, গত ১৯-২০অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে এই ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় আচার। মাসব্যাপী এই দানোত্তম কঠিন চীবরদান প্রতিবছর পার্বত্য চট্টগ্রামে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্য ও উৎসব মুখর পরিবেশে পালন করা হয়। অনুষ্ঠানের সময় বৌদ্ধ ভিক্ষু ও বৌদ্ধ নর-নারীরা এক বিহার থেকে আরেক বিহারে গিয়ে ধর্মানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে থাকেন এবং পরষ্পরের মধ্যে ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয়,তথাগত বুদ্ধের অহিংসা সাম্য মৈত্রী ও মুক্তির বাণী নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা হয়। এ সময় শুধু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীই নয়, বিশ্ব মানবের সুখ শান্তি সমৃদ্ধি ও মানুষে মানুষে সৌহার্দ্য সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ়তর হোক সেটাই কামনা করা হয়।
বিবৃতিতে তারা বলেন, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উৎসবের মাসে ১৮ দলীয় জোট একের পর এক হরতাল-অবরোধ দিতে থাকলে আমরা ধরে নিতে বাধ্য হবো যে বাংলাদেশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় আবেগ-অনুভুতিকে রাজনৈতিক দলগুলো ন্যুনতম গুরুত্ব দেয় না। তাদের উৎসব পালনের মাসে আন্দোলনের নামে হরতাল অবরোধ পালন করা হয়। যা বৌদ্ধরা কখনোই আশা করেনা।’
গত ২৭-২৯ অক্টোবর লাগাতার ৬০ ঘন্টার হরতালে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা নানা ধরণের ভোগান্তি ও ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, শুধু জেলা থেকে জেলা নয় এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় যাওয়াও দুঃসাধ্য করে তুলেছে বিরোধী দলের ডাকা হরতাল। সাধারণ মানুষই শুধু নয় ভিক্ষুরাও নানা দুশ্চিন্তার মধ্যে চলাচল করছেন কখন পিকেটারের ছুড়ে মারা ইটে গাড়ির কাঁচ ভেঙ্গে যায় বা কখনো মারামারি ও সহিংসা ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়েছে।
বিবৃতিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মাসব্যাপী প্রধান ধর্মীয় উৎসব দানোত্তম কঠিন চীবর দানানুষ্ঠানের কথা বিবেচনায় নিয়ে হরতাল-অবরোধের মত কর্মসুচী শিথিল করার দাবি জানিয়ে বলা হয়, সারাদেশে যদি তা সম্ভব নাও অন্তত পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলকে হরতাল-অবরোধের মত কর্মসুচীর আওতামুক্ত রাখা হোক। বিষয়টি বিবেচনার জন্য ১৮ দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে রাঙামাটি জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক মোঃ শাহ আলম বলেন, কেন্দ্র থেকে কোন কর্মসূচী ঘোষণা করা হলে স্থানীয়ভাবে আমাদের কিছু করার থাকেনা। যদি তারা বিষয়টি আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেন এবং কেন্দ্র থেকে এই ব্যাপারে কোন নির্দেশনা দেয়া হয়,অবশ্যই আমরা সেটি অনুসরণ করব। বিএনপি সবসময়ই সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলেও জানান এই বিএনপি নেতা।