‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। বুদ্ধ ধর্মের সকলকে দানশীল হতে হবে। আমাদের ঐতিহ্য আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে সেটা আমাদের আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। বুদ্ধ ধর্ম শান্তির ধর্ম,তাই আমরা সকলের সাথে মিলে মিশে শান্তিতে বসবাস করব,এটাই হোক আমাদের সকলের প্রত্যাশা’-মঙ্গলবার লংগদু উপজেলায় তিনটিলা বন বিহারে ১৫ তম বারের মত দানোত্তম কঠিন চীবর দান উৎসবে চীবর দান করতে গিয়ে এসব কথা বলেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জনাব নিখিল কুমার চাকমা। তিনি আরো বলেন, যদি আমরা সকলে বনভান্তের আদেশ উপদেশ মেনে চলি তাহলে আমাদের জীবনে দুঃখ কষ্ট থাকবে না।
রাঙ্গামাটি রাজ বনবিহারের আবাসিক অধ্যক্ষ শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবিরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন লংগদু সেনাজোনের জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল মোঃ আজাহার উদ্দিন পিএসসি। স্বাগত বক্তব্য দেন তিনটিলা বনবিহার পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক মানিক কুমার চাকমা হেডম্যান। ধর্ম দেশনা দেন শ্রীমৎ পান্থক মহাস্থবির মহাথের। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থি ছিলেন, লংগদু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ তোফাজ্জল চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মফিজুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ জানে আলম,উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মাইনী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক সরকার ও এলাকার বিভিন্ন গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এসময় উপস্থিত ছিলেন। ধর্মীয় গুরুদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রন্যজ্যেতি মহাস্থবির, দেবনন্দ মহাস্থবির, সুমন মহাস্থবির, পন্থক মহাস্থবিরসহ ভিক্ষুসংঘের সদস্যরা।
শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির বলেন মন্দ কাজ ফেলে ভাল কাজ করার সবার মন মানুষিকা তৈরী করতে হবে। জ্ঞান অর্জন করতে হবে। সকলকে মন্দ চিন্তা, মন্দ কথা সব কিছু থেকে আমরা যাতে বিরত থাকতে পারি তাহলে বুদ্ধের আর্শীবাদ লাভ করা সম্ভব।
যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য্যর মধ্য দিয়ে মহাপুন্যবতী উপাসিকা বিশাখা প্রবর্তিত নিয়মে দানোৎত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব সোমবার দুপুর ২টায় বেইন ঘর উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে শুরু হয়। এসময় চীবর দানোৎসবকে ঘিরে বনবিহার এলাকায় পুন্যার্থীদের ঢল নামে।
২৪ ঘন্টার মধ্যে সুতা কেটে সিদ্ধ ও রং করে কাপড় বুনে এবং তা সেলাই করাই হচ্ছে কঠিন চীবর দান। অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল সকাল ছয়টায় বৌদ্ধ পতাকা উত্তোলন, সীবলী পূজা, সংঘদান, ভিক্ষু সংঘের ধর্ম দেশনা, ভিক্ষু সংঘকে পিন্ড দান, শোভা যাত্র সহকারে কঠিন চীবর ও কল্পতরু মঞ্চে আনায়ন, পঞ্চশীল গ্রহন, কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান উৎসর্গ ও ভিক্ষু সংঘের ধর্ম দেশনার শেষে সন্ধ্যা ছয়টা প্রদিপ পূজার মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
লংগদু উপজেলা ও পাশ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজার হাজার মানুষ কল্পতরু নিয়ে বিহারে আসেন এবং সারারাত তৈরী করা চীবর দান করেন। দানোত্তম কঠিন চীবর দান উপলক্ষে মঙ্গল এবং বুধবার বিহারের বাহিরে বসেছে জমজমাট মেলা ।
এটি আমার করা নিউজ। pahar24.com এই পেইজ সবই লাইক দনি, এই নতুন লেখাটি প্রকাশিত হলো Pahar24-এ।