কোথাও প্রত্যাশিত আবার কোথাও অপ্রত্যাশিত ফল। কখনো ভোটারদের উপস্থিতি দেখে হতাশ, আবার কখনো উপচে পড়া ভোটার উপস্থিতিতে আশার আলো। কোথাও চাচা-ভাতিজা-ভাগিনার লড়াই। কোন উপজেলায় লড়াইয়ে সাবেক দুই বারের সাংসদ নির্বাচন থেকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের লড়াইয়ে ঝানু প্রার্থী। আবার কোথাও শতাধিক ভোটের ব্যবধানে কোন প্রার্থীর হতাশার হার। সব মিলে নানা হিসাব নিকাশ, পাওয়া না পাওয়ার হিসেব নিয়েই যেনো শেষ হলো খাগড়াছড়ির ৬টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২টিতে বিএনপি, ২টিতে ইউপিডিএফ, ১টিতে আওয়ামীলীগ এবং ১টিতে জনসংহতি(এমএনলারমা)’র প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১টিতে বিএনপি, ৩টিতে আওয়ামীলীগ এবং ২টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ৩ টিতে স্বতন্ত্র, ১টিতে আওয়ামীলীগ, ১টিতে বিএনপি এবং ১টি জেএসএস (এমএনলারমা) সমর্থিত প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনে তিন পদে মোট ৭৭ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ২৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৫ জন। এবার খাগড়াছড়ির ৬টি উপজেলায় ভোট ভোটার ছিল ৩ লাখ ১শ ৩৮ জন। আর জমা পরেছে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৭৭টি ভোট। শতাংশের হিসাবে যা ৬৪.২৮ শতাংশ। আর উপজেলা ভোটের হিসাবে ৬টি উপজেলার মধ্যে সর্বচ্চো পর্যায়ে আছে মানিকছড়ি। এখানে মোট ৩৬ হাজার ৫শ ২৫টি ভোটের বিপরীতে জমা পরেছে ২৫ হাজার ৫শ ৯২ ভোট। শতাংশের হিসাবে যা ৭০.৬ শতাংশ। এছাড়া নির্বাচনে খাগড়াছড়ি সদরে বাক্সে ভোট জমা পরেছে ৫৩.৫২ শতাংশ, মাটিরাঙ্গায় ভোট পরেছে ৬১.২৫ শতাংশ, মহালছড়িতে জমা পরেছে ৬৮.৪৯ শতাংশ, পানছড়িতে ভোট পরেছে ৬৮.৮৩ শতাংশ এবং রামগড়ে পরেছে ৬৩.৫৪ শতাংশ ভোট।
অবশেষে ভাতিজার কাছে চাচার হার
গত ১৫ ফেব্রুয়ারী এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে রামগড় উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সহ সভাপতি পদ থেকে বহিস্কৃত বেলায়েত হোসেন ভূইয়াঁ দাবী বলেছিলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী ভাতিজা(শহিদুল ইসলাম ভূইয়া ফরহাদ) এবং ভাগিনা(রিয়াজ উদ্দিন রিপন) আমার প্রতিন্দন্দ্বিতায় আসবেনা’। কিন্তু ভাগিনা প্রতিন্দন্দ্বিতায় না আসলেও ভাতিজার কাছে হেরে গেলেন ৫ বারের এই জনপ্রতিনিধি । ভাতিজা শহিদুল ইসলাম ভূইয়াঁর ১০ হাজার ৪শ ৫৪ ভোটের বিপরীতে বেলায়েত হোসেন ভূইয়াঁ পেয়েছেন ৪ হাজার ৬৫ ভোট,যা অর্ধেকেরও কম।
১৬৩ ভোটে কংচারী মারমার হার,যেনো আফসোস বাড়ালোই কেবল
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাচনে শহরের কাছাকাছি কেন্দ্রের ফলাফল দ্রুত চলে আসায় অনেকে ধরে নিয়েছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী কংচারী মারমা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হচ্ছেন। সন্ধ্যায় জেলা কন্ট্রোল রুমে থাকা বিএনপির সহ সভাপতি মনিন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে এ সময় অনেকে মিষ্টি খাওয়াতে বলেন। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকার কেন্দ্রগুলো থেকে ফলাফল আসতে শুরু করলে বদলে যায় ভোটের হিসাব। পিছিনে যান বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী। এগিয়ে যান ইউপিডিএফ সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী চঞ্চুমণি চাকমা। কংচারী মারমার ১৩ হাজার ২শ ৬২ ভোটের বিপরীতে চঞ্চুমণি পান ১৩ হাজার ৪শ ২৫ ভোট। মাত্র ১৬৩ ভোটে পরাজিত হন কংচারী মগ। এদিকে চঞ্চুমণি চাকমা গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান শানে আলমের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সেবার প্রায় এক হাজার ৮০০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি।কিন্তু এবাওে দ্বিতীয় বারের চেষ্টায় ঠিকই নির্বাচনী বৈতরনি পার হয়ে গেলে ইউপিডিএফ এর সমর্থিত এই প্রার্থী।
